ভোরের কুয়াশা তখনো ঘন হয়ে আছে। মাঠের বুক জুড়ে সোনালি ধানের শীষে শিশির ঝলমল করছে। দূরে দেখা যায় এক কৃষকফাটা পায়ের আঙুল মাড়িয়ে জমিতে নেমেছেন, হাতে লাঙল, কাঁধে ক্লান্তি, চোখে স্বপ্ন। এই মানুষটির ঘামেই ভরে ওঠে আমাদের ভাতের থালা, বেঁচে থাকে পুরো জাতি। অথচ বিস্ময় আর বেদনার বিষয় হলো, যে কৃষক দেশের প্রাণশক্তি, সে-ই আজ সবচেয়ে অবহেলিত, সবচেয়ে অবমূল্যায়িত।
হাটে গিয়ে দেখি, শহরের ভোক্তা চাল কিনছে কেজি আশি থেকে একশো টাকায়, কিন্তু কৃষক তার উৎপাদিত ধান বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছে কেজি কুড়িতে। সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে কৃষক চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে, আর ঘরে ফিরে শোনে ক্ষুধার্ত কণ্ঠ বাবা, আজ ভাত হবে?
বাংলাদেশকে আমরা গর্ব করে বলি কৃষিনির্ভর দেশ। কিন্তু এই গর্বের ভিতর লুকিয়ে আছে কৃষকের চোখের পানি, ঋণের বোঝা আর না বলা হাহাকার। প্রশ্নটা তাই বড় সহজ কিন্তু নির্মম যদি কৃষকই বাঁচতে না পারে, তবে কৃষিনির্ভর বাংলাদেশ কতদিন টিকবে?
রাতের শেষ প্রহর। শিমুলপুর গ্রামের মসজিদে ফজরের আজানের সুর যখন ভোরের শীতল বাতাসে মিশে যাচ্ছে, তারও আগে ঘুম ভাঙে হাশেম আলীর। কুয়াশার গাঢ় চাদর ভেদ করে পুব আকাশে তখনো আলোর রেখা ফোটেনি। গোয়ালের গরুটার হাম্বা রব, উঠোনের হাস-মুরগির কোলাহল আর মাটির চুলার ধারে স্ত্রীর চুড়ির শব্দএসবই তাঁর জীবনের আবহসংগীত। কাঁধে লাঙলের ভার, হাতে পুরোনো এক টর্চ। খালি পায়ে শিশিরভেজা মেঠোপথ ধরে তিনি যখন ফসলের মাঠের দিকে হাঁটেন, তখন মনে হয় যেন শত শত বছরের এক উত্তরাধিকারকে বয়ে নিয়ে চলেছেন। এই মাটি তাঁর পূর্বপুরুষের, এই ঘ্রাণ তাঁর রক্তে মেশা। তিনি শুধু একজন কৃষক নন, তিনি এই বাংলার মাটির আত্মার অতন্দ্র প্রহরী।
যে হাত দিয়ে তিনি বীজ বোনেন, সে হাত দিয়ে তিনি সন্তানের মাথাও বুলিয়ে দেন। যে চোখে তিনি মেঘ দেখে বৃষ্টির আশা করেন, সে চোখেই তিনি মহাজনের রক্তচক্ষু আর অভাবের শূন্যতা দেখেন। এই মানুষটির হাড়ভাঙা পরিশ্রমে ফলানো সোনালি ধানেই ভরে ওঠে বাংলাদেশের লক্ষ কোটি মানুষের অন্নপাত্র। তাঁর শ্রমেই সচল থাকে অর্থনীতির চাকা, সুরক্ষিত থাকে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা। অথচ এক নির্মম পরিহাসের মতো, যে কৃষক সারা দেশকে খাওয়ানোর দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন, তাঁর নিজের সন্তানের পাতেই দু'বেলা ভাতের নিশ্চয়তা থাকে না।
এই দ্বন্ধই বা প্যারাডক্সই আজকের বাংলাদেশের সবচেয়ে কঠিন বাস্তবতা। আমরা যখন গর্ব করে বলি, বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, তখন এই প্রশ্নটি এড়িয়ে যাওয়ার কোনো উপায় থাকে নাযে দেশের ভিত্তি কৃষকের ঘামের উপর দাঁড়িয়ে, সে দেশে কৃষক কেন এতটা অবহেলিত, বঞ্চিত এবং প্রান্তিক? তাঁর এক বালতি ধানের বিপরীতে কেন তাঁর সম্বল হয় শুধু একফোঁটা চোখের জল?
শুধু পরিসংখ্যান বা তত্ত্ব দিয়ে কৃষকের মর্মবেদনা বোঝা অসম্ভব। এর জন্য আমাদের কুড়িগ্রামের প্রত্যন্ত গ্রামের কৃষক জসিম উদ্দিনের জীবনের খাতায় একবার চোখ বোলাতে হবে। এ বছর পঞ্চাশ বিঘা জমিতে বোরো ধান লাগানোর সময় তাঁর চোখে ছিল একরাশ স্বপ্ন। ব্যাংক থেকে উচ্চ সুদে ঋণ, স্ত্রীর গলার হার বন্ধক আর স্থানীয় এনজিও থেকে চড়া সুদে ধারসব মিলিয়ে তিনি প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন। ভেবেছিলেন, ফসল উঠলে মেয়ের বিয়ের চিন্তাটা অন্তত মিটবে, ছেলের কলেজে ভর্তির টাকাটাও হয়ে যাবে।
দিনরাত এক করে তিনি প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করেছেন। কখনো সেচের পানির জন্য ডিজেলের বাড়তি দাম গুনেছেন, কখনো সারের জন্য ডিলারের দোকানে ধর্না দিয়েছেন, আবার কখনো কালবৈশাখীর ভয়ে বিনিদ্র রাত কাটিয়েছেন। অবশেষে তাঁর শ্রম সার্থক হলো। মাঠজুড়ে সোনালি ধানের ঢেউ তাঁর মনকে আনন্দে ভরিয়ে দিল।
কিন্তু সেই আনন্দ স্থায়ী হলো না। ফসল কাটার পর যখন তিনি হাটে ধান নিয়ে গেলেন, তখন এক অদৃশ্য দানব যেন তাঁর টুঁটি চেপে ধরল। সেই দানবের নাম ‘সিন্ডিকেট’। ফড়িয়া, আড়তদার আর মিল মালিকদের কারসাজিতে ধানের দাম মণপ্রতি মাত্র ৮০০-৮৫০ টাকা, অর্থাৎ কেজিপ্রতি ২০-২২ টাকা। অথচ বীজ, সার, কীটনাশক, সেচ, শ্রমিকের মজুরি আর নিজের শ্রমের মূল্য ধরলে তাঁর উৎপাদন খরচই পড়েছে কেজিপ্রতি প্রায় ২৫-২৬ টাকা। প্রতি কেজিতে ৪-৫ টাকা লোকসান!
হাশেম আলীর সামনে তখন দুটো পথ খোলাহয় ঋণের দায়ে গ্রাম ছাড়া, নয়তো এই লোকসানেই মহাজনের হাতে ধান তুলে দেওয়া। তিনি দ্বিতীয় পথটিই বেছে নিলেন। তাঁর চোখের সামনেই সেই ধান আড়তদারের গুদামে উঠল, সেখান থেকে গেল মিল মালিকের চাতালে। কয়েক সপ্তাহ পর, সেই চালই পলিশ হয়ে, ঝকঝকে প্যাকেটে ভরে शहरातील সুপারশপে বিক্রি হতে লাগল কেজিপ্রতি ৬০-৭০ টাকায়।
মূল্যের এই শৃঙ্খলে কে কতটা পেল?
কৃষক (উৎপাদক): ২০-২২ টাকা (লোকসানসহ)
ফড়িয়া ও আড়তদার (মধ্যস্বত্বভোগী): ৫-১০ টাকা মুনাফা
মিল মালিক (প্রক্রিয়াজাতকারক): ১৫-২০ টাকা মুনাফা
পাইকার ও খুচরা বিক্রেতা: ১০-১৫ টাকা মুনাফা
ভোক্তা (শহরের ক্রেতা): কিনলেন ৬০-৭০ টাকায়
এই অংকটিই পরিষ্কার করে দেয়, কৃষকের ঘাম আর শ্রমের ফসল কীভাবে একটি পরিকল্পিত শোষণযন্ত্রের মাধ্যমে অন্যের পকেট ভারী করে। কৃষক শুধু উৎপাদনের যন্ত্র, মূল্যের ভাগীদার তিনি নন।
শোষণের বহুমাত্রিক জাল: কেন কৃষক পরাজিত?
কৃষকের এই পরাজয় আকস্মিক নয়, এর পেছনে রয়েছে সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং রাষ্ট্রীয় নীতির এক জটিল ও বহুমাত্রিক জাল।
১. বাজার ব্যবস্থার পরিকল্পিত শোষণ: বাংলাদেশের কৃষি বাজার ব্যবস্থা একটি নিয়ন্ত্রিত বিশৃঙ্খলা। এখানে কৃষক সবচেয়ে দুর্বল ঘুঁটি। ফসল ওঠার মৌসুমে যখন জোগান সর্বোচ্চ, তখন সংঘবদ্ধ মধ্যস্বত্বভোগীরা একজোট হয়ে দাম কমিয়ে দেয়। কৃষকের যেহেতু ফসল সংরক্ষণের জায়গা নেই এবং ঋণের টাকা শোধের তাড়া থাকে, তাই তিনি কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হন। একে বলা হয় ‘মনোপসনি’ (Monopsony) - যেখানে ক্রেতার সংখ্যা কম কিন্তু বিক্রেতা অনেক, ফলে ক্রেতারাই দাম নির্ধারণ করে।
২. ঋণের দুষ্টচক্র (The Debt Trap): সরকারি কৃষি ব্যাংকের ঋণের প্রক্রিয়া এতটাই জটিল ও সময়সাপেক্ষ যে প্রান্তিক কৃষকরা তার নাগাল পান না। ফলে তাঁদের নির্ভর করতে হয় স্থানীয় মহাজন, দাদন ব্যবসায়ী বা এনজিওর ওপর, যাদের সুদের হার চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়ে। একবার ফসলের মার খেলে বা ন্যায্য দাম না পেলে কৃষক সেই ঋণ শোধ করতে পারেন না। পরের মৌসুমে আবার নতুন ঋণ নিতে হয় পুরোনো ঋণ শোধের জন্য। এই দুষ্টচক্র থেকে তাঁর আর মুক্তি মেলে না।
৩. জলবায়ু পরিবর্তনের খাঁড়া: বাংলাদেশের কৃষক এখন প্রকৃতির এক নতুন এবং ভয়ংকর শত্রুর মুখোমুখিজলবায়ু পরিবর্তন। দক্ষিণাঞ্চলে লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়ায় জমির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে। হাওর অঞ্চলে আকস্মিক বন্যা পাকা ফসল ডুবিয়ে দিচ্ছে। উত্তরাঞ্চলে খরা দীর্ঘায়িত হচ্ছে। এই অপ্রত্যাশিত দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য কৃষকের কোনো প্রাতিষ্ঠানিক সুরক্ষা বা কার্যকর ফসল বিমা নেই। ফলে সব হারিয়ে নিঃস্ব হওয়া এখন এক সাধারণ ঘটনা।
৪. নীতিগত উদাসীনতা ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা: সরকারের নীতি প্রায়শই কৃষকের স্বার্থের পরিপন্থী হয়। ভরা মৌসুমে চাল আমদানির অনুমতি দিয়ে স্থানীয় বাজারকে অস্থিতিশীল করে তোলা হয়। কৃষকের জন্য ঘোষিত ভর্তুকি, সার বা বীজ প্রায়ই দুর্নীতির কারণে তাঁর পর্যন্ত পৌঁছায় না। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও অনেক সময় প্রান্তিক কৃষকদের কাছে না গিয়ে শুধু প্রভাবশালী ও বড় কৃষকদের নিয়েই কাজ করেন।
৫. সামাজিক ও মনস্তাত্ত্বিক অবমূল্যায়ন: এই সবকিছুর ঊর্ধ্বে রয়েছে এক গভীর সামাজিক অবহেলা। আমাদের সমাজে ‘কৃষক’ বা ‘চাষা’ শব্দটি যেন একপ্রকার গালি। কোনো বাবা চান না তাঁর শিক্ষিত মেয়েকে একজন কৃষকের সাথে বিয়ে দিতে। কৃষকের ছেলেও আর কৃষক হতে চায় না, সে শহরে গিয়ে একটি কারখানার শ্রমিক বা রিকশাচালক হতেও রাজি। এই সামাজিক অমর্যাদা কৃষকের আত্মবিশ্বাসকে চূর্ণ করে দেয় এবং পরবর্তী প্রজন্মকে কৃষি থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে, যা দেশের ভবিষ্যতের জন্য এক অশনি সংকেত।
অর্থনীতির চালিকাশক্তি, তবু উপেক্ষিত
আসুন কিছু কঠিন বাস্তব কিন্তু সত্য তথ্যের দিকে তাকাই:
শ্রমশক্তির কেন্দ্র: বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (BBS)-এর শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী, দেশের মোট কর্মসংস্থানের প্রায় ৪০.৬% এখনো কৃষি খাতে। অর্থাৎ, প্রতি ১০ জন কর্মজীবী মানুষের ৪ জনই কৃষক বা কৃষিশ্রমিক।
জিডিপির ভিত্তি: দেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) কৃষির অবদান প্রায় ১১.৫০%। শিল্প ও সেবা খাতের ভিত্তিও অনেকাংশে কৃষির উপর নির্ভরশীল।
বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান: বাংলাদেশ আজ ধান উৎপাদনে বিশ্বে তৃতীয়, সবজি উৎপাদনে তৃতীয়, এবং মাছ উৎপাদনেও শীর্ষস্থানীয়। এই অসামান্য সাফল্য এনে দিয়েছেন আমাদের কৃষকেরাই।
আয়ের বৈষম্য: এত অর্জনের পরেও, কৃষিখানার মাসিক গড় আয় দেশের অন্য যেকোনো পেশার তুলনায় সর্বনিম্ন। যেখানে একজন সরকারি কর্মচারীর গড় আয় ৩০,০০০ টাকার বেশি, সেখানে একজন কৃষকের গড় আয় ১০,০০০ টাকার নিচে।
এই পরিসংখ্যানগুলোই বলে দেয়, কৃষক আমাদের জাতীয় অর্থনীতির হৃৎপিণ্ড, কিন্তু সেই হৃৎপিণ্ডই আজ সবচেয়ে বেশি রক্তক্ষরণের শিকার।
কৃষকের এই বঞ্চনার দায় এককভাবে কারো নয়। এর জন্য দায়ী রাষ্ট্রব্যবস্থার নীতিগত দুর্বলতা, সমাজের কাঠামোগত উদাসীনতা, মধ্যস্বত্বভোগীদের সীমাহীন লোভ এবং ভোক্তা হিসেবে আমাদের প্রত্যেকের অসচেতনতা। আমরা সুপারশপে দামাদামি করে সবজি কিনি, কিন্তু কখনো ভাবি না যে কৃষক এর কতটুকু অংশ পাচ্ছেন।
সময় এসেছে এই নীরবতা ভাঙার। কৃষকের প্রাপ্য মর্যাদা ফিরিয়ে দিতে হলে একটি সমন্বিত ও বিপ্লবী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে:
১. কৃষক-বান্ধব বাজার ব্যবস্থা: সরকারকে কঠোর হাতে সিন্ডিকেট দমন করতে হবে। ‘ন্যূনতম সহায়ক মূল্য’ (Minimum Support Price) নির্ধারণ এবং সরকারি উদ্যোগে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ফসল ক্রয় নিশ্চিত করতে হবে। সারাদেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে আধুনিক সংরক্ষণাগার ও কোল্ড চেইন নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে হবে।
২. সহজলভ্য ঋণ ও ফসল বিমা: মহাজনী ঋণের বিকল্প হিসেবে সরকারি ব্যাংক থেকে বিনা জামানতে বা সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় আবহাওয়া-ভিত্তিক ‘ফসল বিমা’ চালু করা বাধ্যতামূলক।
৩. প্রযুক্তি ও তথ্যের সন্নিবেশ: আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি, উন্নত বীজ এবং সার প্রান্তিক কৃষকের কাছে সহজলভ্য করতে হবে। ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষকদের বাজারের সঠিক তথ্য जानने সুযোগ করে দিতে হবে।
৪. সামাজিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা: কৃষককে ‘খাদ্যযোদ্ধা’ হিসেবে রাষ্ট্রীয় ও সামাজিকভাবে স্বীকৃতি দিতে হবে। কৃষকের সন্তানদের জন্য শিক্ষা ও অন্যান্য ক্ষেত্রে বিশেষ কোটার ব্যবস্থা করা যেতে পারে, যা তাঁদের এই পেশায় থাকতে উৎসাহিত করবে।
শেষ প্রশ্নটি পাঠকের কাছেই রাখছি। আপনার থালার ভাতের দাম যখন আপনি দেন, তখন কি একবারও ভেবেছেন এর কতটুকু অংশ সেই কৃষকের হাতে পৌঁছায়, যার রক্ত ঘাম হয়ে এই ভাত ফলিয়েছে? আমাদের এই নীরবতার দায় কি আমাদেরও নয়?
কারণ, কৃষক যদি হাল ছেড়ে দেন, তবে এই ইট-পাথরের জঙ্গল, এই দালানকোঠার সভ্যতা একমুহূর্তেও টিকতে পারবে না। কৃষকের কান্না থামানো তাই কোনো করুণা নয়, বরং আমাদের নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্যই অপরিহার্য।
বাংলাদেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি, এমনকি স্বাধীনতার সংগ্রামেও কৃষকের অবদান অমলিন। অথচ আজও সেই কৃষককে আমরা অবহেলার অন্ধকারে ফেলে রেখেছি। শহরের আলো ঝলমলে রাস্তায় আমরা নিশ্চিন্তে চলাফেরা করি, অথচ গ্রামে কৃষকের সন্তান ক্ষুধার্ত পেটে ঘুমোয়। আমরা যখন বিদেশি বিলাসী পণ্যে টাকা খরচ করি, তখনই কৃষক নিজের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য দাম না পেয়ে চোখের জল গোপনে মুছে ফেলে।
একবার ভেবে দেখুন
যদি কৃষকরা একদিন রোদ-ঝড়-বাদলের এই চাষাবাদ ছেড়ে দেয়, তবে আমাদের ভাতের থালা কে ভরাবে? আমাদের সন্তানের ক্ষুধার্ত কান্না কে থামাবে?
তাহলে কেন আমরা এখনো নীরব? কেন কৃষকের দুর্দশা আমাদের বিবেককে নাড়া দেয় না?
কৃষককে অবহেলা মানে নিজের ভবিষ্যৎকে অবহেলা। কৃষকের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়াই আমাদের জাতি হিসেবে টিকে থাকার শর্ত।
👉 প্রিয় পাঠক, আপনার মতে কৃষকের এই অবহেলার দায় কাররাষ্ট্র, সমাজ, নাকি আমরা প্রত্যেকেই?
আপনার মতামত আমাদের জানান।
এই লেখা শেয়ার করুন, হয়তো আপনার একটি শেয়ারই কৃষকের প্রাপ্য মর্যাদা নিয়ে আলোচনার সূচনা করবে। 🌾
বাংলাদেশ কৃষক দুর্দশা, কৃষকের অবহেলা, কৃষিনির্ভর বাংলাদেশ, কৃষক অধিকার, কৃষকের সমস্যা।
🌸 আপনার মন্তব্যের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ!
আপনার মতামত আমাদের অনুপ্রাণিত করে এবং আগামীতে আরও মানসম্পন্ন কনটেন্ট তৈরিতে সহায়তা করে।
আপনি যদি কোনো নির্দিষ্ট বিষয় বা গল্প পছন্দ করে থাকেন, জানালে ভালো লাগবে।
নিয়মিত পাশে থাকুন — আপনার সহযোগিতা ও ভালোবাসাই আমাদের এগিয়ে চলার শক্তি।
শুভ কামনায়,
✍️ কল্পকথা-৩৬০ ব্লগ টিম
https://kalpakatha360.blogspot.com