জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত কি শুধুই সময়ের হিসেব? নাকি সেই মুহূর্তেই লুকিয়ে থাকে এমন কিছু, যা বদলে দিতে পারে ভবিষ্যতের গতিপথ? কখনো কি ভেবেছেন, আপনার দাদার পুরনো ট্রাঙ্ক থেকে পাওয়া একটি অদ্ভুত যন্ত্র আপনাকে নিয়ে যেতে পারে এক শতাব্দী পেছনের কোনো অসমাপ্ত ষড়যন্ত্রের কেন্দ্রে?
আমি এমনই এক বাস্তবতার মুখোমুখি হয়েছিলাম, যেখানে সময়ের আয়ু ছিল মাত্র তিন সেকেন্ড। কিন্তু সেই তিন সেকেন্ডের মধ্যেই আমি প্রত্যক্ষ করেছি এমন এক ইতিহাস, যা ধূলিসাৎ হয়ে যাওয়ার আগ মুহূর্তে আমার সামনে নিজেকে প্রকাশ করেছে।
এই গল্প শুধুই কোনো রহস্য উপন্যাস নয়। এটি একজোড়া চোখের গভীর আকুতি, এক দাদার অসমাপ্ত গবেষণা, আর এক তরুণের সাহসিকতার অনুপম কাহিনি—যেখানে প্রযুক্তি, ইতিহাস ও হৃদয়ের সংযোগ ঘটে এক অভাবনীয় সত্যের উন্মোচনে। এটি সেইসব গল্পের একটি যা পাঠ শেষে আপনার মনে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেবে—"আমার জীবনের তিন সেকেন্ড কোথায় হারিয়ে গেল?"
এই ব্লগে আপনি শুধু গল্পই পাবেন না, বরং এমন এক যাত্রায় অংশ নেবেন, যা আপনাকে ছুঁয়ে যাবে স্মৃতির গভীরে, প্রশ্ন তুলবে উত্তরহীন বিশ্বাসের, আর মনে করিয়ে দেবে—কখনও কখনও, মাত্র তিন সেকেন্ডই এক শতাব্দীর দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে পারে।
Flash Fiction, বাংলা ফিকশন, থ্রিলার গল্প, সময় ভ্রমণ, স্মৃতির যন্ত্র, মাইক্রোফিকশন, ডীপ ফিকশন, ইতিহাস ও রহস্য গল্প,সময়—এক অদ্ভুত প্রহেলিকা। কখনও মন্থর, কখনও দ্রুত। কিন্তু কেমন হবে যদি এক শতাব্দীর দীর্ঘ রহস্যের জট খুলতে আপনার হাতে থাকে মাত্র তিন সেকেন্ড? এটি কোনো সিনেমার প্লট নয়, বরং আমার জীবনের এক অবিশ্বাস্য বাস্তবতা। যে বাস্তবতা আমাকে শিখিয়েছে, প্রতিটি সেকেন্ড কতটা মূল্যবান হতে পারে, যদি তার সাথে জড়িয়ে থাকে এক শতাব্দীর দীর্ঘশ্বাস।
আমার নাম আরিয়ান চৌধুরী। ঢাকার এক ব্যস্ত আইটি ফার্মে কর্মরত একজন সাধারণ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। কোডিং আর ডেডলাইনের মধ্যেই বাঁধা আমার জীবন। কিন্তু আমার দাদা, ডক্টর ইমতিয়াজ চৌধুরী, ছিলেন একজন খ্যাতনামা প্রত্নতাত্ত্বিক ও ইতিহাসবিদ। তাঁর জীবনের শেষ কয়েক বছর কেটেছিল আলঝেইমার্সের সাথে যুদ্ধ করে। স্মৃতিভ্রংশের সেই অতল গহ্বরে হারিয়ে গিয়েছিল তাঁর জীবনের মূল্যহীন সেসব গবেষণা।
দাদার মৃত্যুর এক বছর পর, তাঁর পুরনো ট্রাঙ্কটা গোছাতে গিয়ে ধুলোর আস্তরণের নিচ থেকে বেরিয়ে এলো অদ্ভুতদর্শন এক পিতলের বাক্স। বাক্সের ওপরে খোদাই করা এক cryptic বার্তা— "ত্রিকালদর্শী যন্ত্র। আয়ু: তিন সেকেন্ড।"
ভেতরে ছিল অদ্ভুত এক যন্ত্র। অনেকটা পুরনো পকেট ঘড়ির মতো দেখতে, কিন্তু কাঁটার বদলে সেখানে ছিল এক টুকরো স্বচ্ছ ক্রিস্টাল। পাশে একটা ছোট্ট বোতাম। কৌতুহলের বশে বোতামটা চাপতেই আমার ঘরের দেয়ালে একঝলক আলো আছড়ে পড়লো। তিন সেকেন্ডের জন্য ভেসে উঠল এক অস্পষ্ট, ভৌতিক ছবি—যেন কোনো পুরনো দিনের হলোগ্রাম।
সেই তিন সেকেন্ডের ছবিতে আমি যা দেখলাম, তা আমার রক্ত জমিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল।
প্রথমবার যখন বোতামটা টিপেছিলাম, সবকিছু এতটাই আকস্মিক ছিল যে আমি কিছুই বুঝে উঠতে পারিনি। শুধু মনে আছে, ১৯৪৩ সালের কলকাতার এক বৃষ্টিভেজা রাতের দৃশ্য। রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা একটা কালো অ্যাম্বাসেডর গাড়ি, গ্যাসের আলোয় চিকচিক করছে ভেজা রাস্তা। একজন ব্রিটিশ অফিসার দ্রুত পায়ে গাড়িতে উঠছেন, তাঁর হাতে একটি চামড়ার ব্যাগ। আর গাড়ির পেছনের সিটে বসে থাকা এক নারীর আতঙ্কিত, অশ্রুসজল চোখ।
ওই নারী আর কেউ নন, আমার দাদী, অর্থাৎ ডক্টর ইমতিয়াজের স্ত্রী, রওশন আরা।
তিন সেকেন্ড। ব্যস, এটুকুই। আলোটা নিভে যাওয়ার সাথে সাথে আমার হৃৎপিণ্ডটা ধক করে উঠল। এটা কী? দাদার কোনো অসমাপ্ত গবেষণার অংশ? নাকি তাঁর মস্তিষ্ক থেকে মুছে যাওয়া কোনো ভয়ংকর স্মৃতির খণ্ডাংশ?
আমি যন্ত্রটা নিয়ে ঢাকার সবচেয়ে পুরনো অ্যান্টিক শপগুলোতে ঘুরতে শুরু করলাম। নিউমার্কেটের এক কোণায় বসা এক বৃদ্ধ কারিগর যন্ত্রটা হাতে নিয়ে চমকে উঠলেন। বললেন, "বাবা, এই জিনিস তো সাধারণ নয়। একে বলা হতো 'স্মৃতিবীক্ষণ যন্ত্র'। শোনা যায়, মানুষের মস্তিষ্কের স্মৃতিকে ধারণ করে রাখতে পারে এই ক্রিস্টাল। তবে প্রতিবার ব্যবহারে এর শক্তি ক্ষয় হয়।"
কথাটা শোনার পর আমার শিরদাঁড়া দিয়ে একটা ঠান্ডা স্রোত বয়ে গেল। তার মানে, এই যন্ত্র ব্যবহার করার সুযোগ আমার হাতে সীমিত। প্রতিবার তিন সেকেন্ডের জন্য আমি দাদার জীবনের এক ঝলক দেখতে পাবো, কিন্তু খুব বেশিবার নয়।
দ্বিতীয়বার যন্ত্রটা ব্যবহার করার আগে আমি প্রস্তুত ছিলাম। একটা হাই-স্পিড ক্যামেরা সেট করলাম, যাতে ওই তিন সেকেন্ডের প্রতিটি ফ্রেম রেকর্ড করে রাখতে পারি। কাঁপা কাঁপা হাতে বোতামটা চাপলাম।
এবারও একই দৃশ্য। কিন্তু এবার আমি আরও মনোযোগ দিয়ে দেখলাম। ব্রিটিশ অফিসারের হাতের চামড়ার ব্যাগটার ওপর একটা প্রতীক খোদাই করা—একটা ফিনিক্স পাখি, যার ডানা আগুনের শিখার মতো। আর দাদীর আতঙ্কিত চোখের পাশে আমি এক ঝলকের জন্য দেখলাম, তাঁর হাতে ধরা একটা পুরনো বই। বইটার নাম অস্পষ্ট, শুধু দুটো শব্দ পড়া যাচ্ছে— "অখণ্ড জ্ঞান"।
এই তিন সেকেন্ডের দৃশ্যটা আমার মাথায় গেঁথে গেল। ফিনিক্স পাখির প্রতীক আর 'অখণ্ড জ্ঞান'—এই দুটো সূত্র নিয়ে আমি দাদার পুরনো ডায়েরি আর গবেষণাপত্র ঘাঁটতে শুরু করলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে দিনের পর দিন কাটিয়ে দিলাম।
অবশেষে, দাদার এক পুরনো ডায়েরিতে সেই ফিনিক্স প্রতীকের উল্লেখ পেলাম। এটি ছিল 'দ্য ফিনিক্স সোসাইটি' নামক এক গুপ্ত সংগঠনের প্রতীক। ব্রিটিশ শাসনামলে ভারতবর্ষে সক্রিয় ছিল এই সোসাইটি। তাদের উদ্দেশ্য ছিল প্রাচ্যের প্রাচীন জ্ঞান, বিজ্ঞান আর দর্শন নিজেদের কুক্ষিগত করে আধিপত্য বিস্তার করা।
ডায়েরি থেকে আমি যা জানতে পারলাম, তা এক ভয়ংকর ষড়যন্ত্রের গল্প। আমার দাদা, ডক্টর ইমতিয়াজ চৌধুরী, এবং তাঁর কিছু সহকর্মী—যাঁদের মধ্যে কয়েকজন ছিলেন ভারতীয় ও ব্রিটিশ—একসাথে এক যুগান্তকারী গবেষণা করছিলেন। তাঁরা প্রাচীন পুঁথি আর বিজ্ঞানকে একত্রিত করে 'অখণ্ড জ্ঞান' নামক এক পাণ্ডুলিপি তৈরি করছিলেন, যাতে নিহিত ছিল চিকিৎসাবিজ্ঞান, জ্যোতির্বিদ্যা এবং মানবজাতির ভবিষ্যৎ বদলে দেওয়ার মতো প্রযুক্তি।
কিন্তু ফিনিক্স সোসাইটির নেতা, কর্নেল রিচার্ড হ্যারিসন, এই গবেষণার কথা জানতে পারেন। তিনি চেয়েছিলেন এই জ্ঞানকে কেবল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের স্বার্থে ব্যবহার করতে। ১৯৪৩ সালের সেই রাতে, কর্নেল হ্যারিসন কলকাতায় দাদার ল্যাবরেটরি থেকে সেই পাণ্ডুলিপির একটি অংশ চুরি করে নিয়ে যান। আমার দাদী সেই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন।
আমার দাদা বুঝতে পেরেছিলেন, এই জ্ঞান ভুল হাতে গেলে মানবজাতির জন্য তা অভিশাপ হয়ে উঠবে। তাই তিনি পাণ্ডুলিপির বাকি অংশগুলো লুকিয়ে ফেলেন এবং সেগুলোর অবস্থান বিভিন্ন সংকেতের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। আর সেই রাতের ভয়ংকর স্মৃতি তিনি ধারণ করে রেখেছিলেন এই 'স্মৃতিবীক্ষণ যন্ত্রে'—ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সতর্কবার্তা হিসেবে।
আমি বুঝতে পারলাম, এই রহস্যের সমাধান শুধু ঢাকায় বসে করা সম্ভব নয়। কর্নেল হ্যারিসনের তথ্য ঘাঁটতে গিয়ে জানতে পারলাম, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তিনি ইংল্যান্ডে ফিরে যান এবং সেখানে এক প্রভাবশালী famíliar গোড়াপত্তন করেন। তাঁর বংশধররা এখনও লন্ডনে অত্যন্ত ক্ষমতাশালী।
আমার হাতে থাকা তিন সেকেন্ডের শেষ দৃশ্যটা দেখার সিদ্ধান্ত নিলাম। হয়তো সেখানেই লুকিয়ে আছে পরবর্তী সূত্র। শেষবারের মতো বোতামটা চাপতেই দৃশ্যটা ভেসে উঠল। এবার আরও স্পষ্ট। ব্রিটিশ অফিসারের পাশে বসা দাদীর হাতের বইটা আমি পরিষ্কার দেখতে পেলাম। বইটার ওপরে লেখা ছিল— "St. Dunstan in the East, London"।
এটি লন্ডনের একটি পুরনো চার্চের নাম, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বোমায় বিধ্বস্ত হয়েছিল। আমি নিশ্চিত হলাম, পাণ্ডুলিপির চুরি হয়ে যাওয়া অংশ বা সে সম্পর্কিত কোনো সূত্র সেখানেই লুকিয়ে রাখা হয়েছিল।
লন্ডনে পৌঁছানোর পর আমার মনে হলো, আমি একা নই। কেউ বা কারা যেন আমাকে অনুসরণ করছে। ঢাকার মতোই লন্ডনের রাস্তায় আমি সেই অশুভ ছায়া অনুভব করতে লাগলাম। আমি বুঝতে পারলাম, ফিনিক্স সোসাইটি এখনও সক্রিয় এবং তারা জানে আমি তাদের এক শতাব্দীর পুরনো রহস্যের কতটা কাছাকাছি চলে এসেছি।
St. Dunstan in the East চার্চের ধ্বংসাবশেষের মধ্যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা খুঁজে বেড়ালাম। অবশেষে, চার্চের এক পুরনো সমাধির নিচে একটি গোপন কুঠুরির সন্ধান পেলাম। সেখানে একটি লোহার বাক্স ছিল, যার ওপর সেই ফিনিক্স পাখির প্রতীক।
বাক্সটা খুলতেই আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে গেল। ভেতরে 'অখণ্ড জ্ঞান' পাণ্ডুলিপির সেই চুরি যাওয়া অংশটা ছিল না। ছিল কর্নেল হ্যারিসনের নিজের হাতে লেখা একটি ডায়েরি।
কর্নেল হ্যারিসনের ডায়েরিটি ছিল এক স্বীকারোক্তি। তিনি লিখেছেন, 'অখণ্ড জ্ঞান' চুরি করার পর তিনি এর ভয়াবহতা উপলব্ধি করতে পারেন। এই জ্ঞান কোনো একক দেশ বা গোষ্ঠীর হাতে থাকা উচিত নয়। তিনি ফিনিক্স সোসাইটির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে পাণ্ডুলিপিটি লুকিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু সোসাইটি তা জেনে যায় এবং তাঁকে হত্যা করে।
ডায়েরির শেষ পাতায় একটি cryptic মানচিত্র আঁকা ছিল। সেই মানচিত্র ধরে আমি পৌঁছালাম ব্রিটিশ লাইব্রেরির এক গোপন আর্কাইভে। সেখানেই, বহু সাধারণ বইয়ের আড়ালে লুকিয়ে রাখা ছিল 'অখণ্ড জ্ঞান'-এর সম্পূর্ণ পাণ্ডুলিপি।
কিন্তু আমি সেখানে একা ছিলাম না। আমার পেছনে এসে দাঁড়াল এক বৃদ্ধ। তাঁর চোখেমুখে ক্ষমতার দম্ভ। তিনি নিজেকে কর্নেল হ্যারিসনের প্রপৌত্র, অ্যাড্রিয়ান হ্যারিসন, এবং ফিনিক্স সোসাইটির বর্তমান প্রধান হিসেবে পরিচয় দিলেন।
তাঁর হাতে ছিল একটি অত্যাধুনিক অস্ত্র। তিনি বললেন, "এই পাণ্ডুলিপি আমাদের পরিবারের এক শতাব্দীর সাধনা। তোমার দাদা যা রক্ষা করতে চেয়েছিলেন, তা আজ আমাদের হবে।"
ঠিক সেই মুহূর্তে আমার মনে পড়ল দাদার কথা। তাঁর তিন সেকেন্ডের সেই স্মৃতি। সেই তিন সেকেন্ডের আয়ুতেই তিনি এক শতাব্দীর গল্প বুনে দিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি শুধু বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করেননি, তিনি আমাকে শিখিয়েছিলেন—সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার গুরুত্ব।
আমার কাছে কোনো অস্ত্র ছিল না, কিন্তু আমার কাছে ছিল জ্ঞান। আমি অ্যাড্রিয়ানকে বললাম, "এই জ্ঞান কোনোদিনও আপনাদের হবে না। কারণ এর মূল দর্শনটাই হলো ভাগ করে নেওয়া, কুক্ষিগত করা নয়।"
কথাটা বলেই আমি লাইব্রেরির ফায়ার অ্যালার্ম বাজিয়ে দিলাম এবং লাইব্রেরির অনলাইন ডেটাবেসে পাণ্ডুলিপির ছবিগুলো আপলোড করার প্রক্রিয়া শুরু করে দিলাম। আমার উদ্দেশ্য ছিল, এই бесцен্য জ্ঞানকে সম্পূর্ণ ওপেন-সোর্স করে দেওয়া, যাতে তা সমগ্র মানবজাতির কল্যাণে ব্যবহৃত হয়।
সাইরেনের শব্দে অ্যাড্রিয়ান দিশেহারা হয়ে পড়েন। তাঁর লোকজন আমাকে আটকানোর আগেই আমি আমার কাজ শেষ করতে সক্ষম হই। কিছুক্ষণের মধ্যেই ব্রিটিশ পুলিশ এবং লাইব্রেরির নিরাপত্তা কর্মীরা এসে পৌঁছায়। অ্যাড্রিয়ান এবং তাঁর সঙ্গীরা ধরা পড়ে।
আমি ঢাকায় ফিরে এসেছি। 'অখণ্ড জ্ঞান' আজ সারা বিশ্বের গবেষকদের জন্য উন্মুক্ত। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে তা নিয়ে গবেষণা হচ্ছে।
আমার দাদার সেই 'স্মৃতিবীক্ষণ যন্ত্রটা' এখন শান্ত। ওর তিন সেকেন্ডের আয়ু ফুরিয়েছে, কিন্তু রেখে গেছে এক শতাব্দীর দীর্ঘ গল্প। সেই তিন সেকেন্ডের স্মৃতি আমাকে শিখিয়েছে, আমাদের পূর্বপুরুষদের ত্যাগ, তাঁদের সংগ্রাম বৃথা যায় না। তাঁদের রেখে যাওয়া পথ ধরেই আমাদের ভবিষ্যৎ নির্মাণ করতে হয়।
আমার জীবন এখন আর শুধু কোডিং আর ডেডলাইনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। আমি এখন ইতিহাসের সেই গভীর সমুদ্রে ডুব দিয়েছি, যেখানে প্রতিটা সেকেন্ড এক নতুন রহস্যের দরজা খুলে দেয়। কারণ আমি জানি, কখনও কখনও মাত্র তিন সেকেন্ডই এক শতাব্দীকে পথ দেখানোর জন্য যথেষ্ট।
এই গল্প কেবল একটি কাল্পনিক থ্রিলার নয়—এটি একটি আয়না। সেই আয়নায় আপনি দেখতে পারেন অতীতের কোনো বিস্মৃত ইতিহাস, আজকের দ্রুত পাল্টে যাওয়া বাস্তবতা, কিংবা ভবিষ্যতের এক সম্ভাবনাময় সত্য, যা আপনার হাতেই গড়া হতে পারে।
আমার দাদার সেই তিন সেকেন্ডের স্মৃতি কেবল একটি ব্যক্তিগত উত্তরাধিকার নয়, বরং একটি প্রজন্মের প্রতি বার্তা—সত্যকে খুঁজে পাও, যত কঠিনই হোক না কেন; আলো জ্বালাও, যত অন্ধকারই ঘনিয়ে আসুক না কেন। কারণ এক মুহূর্তের সিদ্ধান্ত অনেক সময় এক শতাব্দীর ভাগ্য নির্ধারণ করে দিতে পারে।
প্রিয় পাঠক,
আপনিও কি নিজের জীবনের কোনো “তিন সেকেন্ডের আয়ু” খুঁজে পেয়েছেন কখনো? সেই মুহূর্ত, যা আপনাকে বদলে দিয়েছে? হয়তো সেটি ছিল এক অস্পষ্ট স্বপ্ন, হয়তো কোনো পুরনো মানুষ কিংবা একটি ভুলে যাওয়া বইয়ের পৃষ্ঠা…
👉 আমি আপনাকে আমন্ত্রণ জানাই—সেই স্মৃতি, সেই ক্ষণ, সেই গল্প শেয়ার করুন এই ব্লগের কমেন্টে। কারণ প্রতিটি মানুষের জীবনেই থাকে এমন কিছু না বলা গল্প, যা হয়তো কারও কাছে হয়ে উঠবে নতুন আলো।
আজ যদি আমরা কেউ একজন সাহস করে সত্যকে সামনে আনি, তবে কাল হয়তো আরেকজন তার বিশ্বাস খুঁজে পাবে।
📚 গল্পের শেষ নেই—শুধু পাঠকের চোখে নতুন করে জন্ম নেয় প্রতিটি বাক্য।
আপনিই হোন সেই পাঠক, যাঁর চোখে ভবিষ্যতের সত্যেরা আলোকিত হবে।
ভালো লাগলে শেয়ার করুন। কারণ একটুখানি আলো ছড়িয়ে দিতেই তো আমরা সবাই এখানে... 🌍✨
🌸 আপনার মন্তব্যের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ!
আপনার মতামত আমাদের অনুপ্রাণিত করে এবং আগামীতে আরও মানসম্পন্ন কনটেন্ট তৈরিতে সহায়তা করে।
আপনি যদি কোনো নির্দিষ্ট বিষয় বা গল্প পছন্দ করে থাকেন, জানালে ভালো লাগবে।
নিয়মিত পাশে থাকুন — আপনার সহযোগিতা ও ভালোবাসাই আমাদের এগিয়ে চলার শক্তি।
শুভ কামনায়,
✍️ কল্পকথা-৩৬০ ব্লগ টিম
https://kalpakatha360.blogspot.com